দশ মহাবিদ্যা নিয়ে আমাদের মনে অজস্র প্রশ্ন। কালী কেন শবারূঢ়া? কেন তিনি মহাকালের সঙ্গে বিপরীতরতাতুরা? স্মার্ত ধর্মে যা সর্বদাই বর্জনীয় বলে বিবেচিত, সেই পঞ্চমকার কেন মহাবিদ্যা তারার সাধনায় অপরিহার্য? কাম যদি রিপু হয়, ত্রিপুরসুন্দরী স্বয়ং কেন কামরূপিণী কামেশ্বরী? ছিন্নমস্তা রূপটি কেন? কেন তিনি মহাবিদ্যাদের মধ্যে উগ্রতমা? ধূমাবতী বিধবা কেন? যাঁকে আমরা সুখদায়িনী মঙ্গলময়ী বলে জানি, কেন তিনি সমস্ত অমঙ্গলের প্রকটমূর্তি হয়ে কাকধ্বজ রথে বিরাজ করেন? এই সমস্ত প্রশ্নের উত্তর পেতে হলে তন্ত্রোক্ত ক্রিয়াসমূহের মধ্যে সমাহিত জ্ঞানকাণ্ডটি বোঝা অত্যন্ত আবশ্যক। মহাবিদ্যাদের মন্ত্র, যন্ত্র, সাধনতত্ত্ব �... See more
দশ মহাবিদ্যা নিয়ে আমাদের মনে অজস্র প্রশ্ন। কালী কেন শবারূঢ়া? কেন তিনি মহাকালের সঙ্গে বিপরীতরতাতুরা? স্মার্ত ধর্মে যা সর্বদাই বর্জনীয় বলে বিবেচিত, সেই পঞ্চমকার কেন মহাবিদ্যা তারার সাধনায় অপরিহার্য? কাম যদি রিপু হয়, ত্রিপুরসুন্দরী স্বয়ং কেন কামরূপিণী কামেশ্বরী? ছিন্নমস্তা রূপটি কেন? কেন তিনি মহাবিদ্যাদের মধ্যে উগ্রতমা? ধূমাবতী বিধবা কেন? যাঁকে আমরা সুখদায়িনী মঙ্গলময়ী বলে জানি, কেন তিনি সমস্ত অমঙ্গলের প্রকটমূর্তি হয়ে কাকধ্বজ রথে বিরাজ করেন? এই সমস্ত প্রশ্নের উত্তর পেতে হলে তন্ত্রোক্ত ক্রিয়াসমূহের মধ্যে সমাহিত জ্ঞানকাণ্ডটি বোঝা অত্যন্ত আবশ্যক। মহাবিদ্যাদের মন্ত্র, যন্ত্র, সাধনতত্ত্ব প্রভৃতি গুহ্যাতিগুহ্য বিষয়; অতএব গুরুপরম্পরার বাইরে প্রকাশ্য নয়। তবে এ কথাও সত্য যে তন্ত্রশাস্ত্র ও শাক্তদর্শনের এই মৌলিক তত্ত্বগুলো গুপ্ত হতে হতে আজ লুপ্ত হওয়ার পথে। ফলত মূলস্রোতীয় সংস্কৃতিতে তন্ত্র চিরকালই ভীতিপ্রদ ও বিকৃত রূপে উপস্থাপিত হয়ে আসছে। বর্তমানকালীন 'তন্ত্র হরর' নামক genreটি তার একটি উদাহরণ। অপর দিকে, ভক্তির দোহাই দিয়ে শ্মশানবাসিনী স্বাধীনা দেবীদের মূলস্রোতীয় ধর্মে সমীকৃত করার উদ্দেশ্যে তাঁদের উপর কৃত্রিম ভাবে 'ভদ্র' সমাজোচিত মতাদর্শ আরোপ করার চলটিও নতুন নয়। তাছাড়া অধিকাংশ সময় যখন কালী প্রমুখ মহাবিদ্যাদের মূর্তিতত্ত্ব নিয়ে আলোচনা করা হয়; তখন শাক্তদর্শনের মৌলিক সিদ্ধান্তগুলোর সম্বন্ধে স্পষ্ট ধারণা না থাকার কারণে মূর্তিতত্ত্ব-ব্যাখ্যার মধ্যে অবাঞ্ছিত ভাবে ঢুকে পড়ে অদ্বৈত বেদান্তের 'জগন্মিথ্যা'-র সিদ্ধান্ত, কিংবা সাংখ্যের দ্বৈতবাদ ও জড় প্রকৃতির ভাবনা।